সংবাদপত্র- ব্রডকাস্ট মিডিয়ায় চিন্তাধারা
জোনায়েদ মানসুর
দেশের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো গতানুগতিক ধারার। একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে পাঠক, দর্শক কিংবা শ্রোতা চান নতুন কিছু। বাড়তি কিছু। এ বাড়তি কিছু যারা দিতে পারেন, তারাই পাঠক, দর্শক কিংবা শ্রোতা ধরে রাখতে পারে। টিকে থাকতে পারে বা পারবে দীর্ঘদিন। নতুনত্ব বা বাড়তি কিছু দিতে পারলে ওই গণমাধ্যটি একজন পাঠক, দর্শক কিংবা শ্রোতার কাছে পছন্দের তালিকায় সবার আগে। নিম্নে কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করছি। প্রথম আলো চাকরি বাকরি নিয়ে কাজ করছে। তরুণদের নিয়ে কাজ করছে মিট দ্য এক্সপার্ট নামে। এখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় কর্মকর্তা বা সফল উদ্যোক্তার কাছ থেকে তরুণেরা যেন সরাসরি পরামর্শ বা দিকনির্দেশনা পেতে পারেন, সে লক্ষ্যেই প্রথম আলোর বিশেষ আয়োজন মিট দ্য এক্সপার্ট। প্রতি মাসেই মিট দ্য এক্সপার্টে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাম নিবন্ধন করেন তরুণেরা। বাছাইকৃত কয়েকজন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। এমন সব আলোচনা, পরামর্শ, তরুণদের জিজ্ঞাসা ও সফল ব্যক্তিদের সাফল্য-ব্যর্থতার জানা-অজানা গল্প নিয়েই এগিয়ে চলেছে । এছাড়া গণিত উৎসব করছে। নারীদের বিশেষ করে এসিড দগ্ধদের নিয়ে তারা কাজ করে। বণিক বার্তা উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করে। আর বেশির ভাগ প্রিন্ট গণমাধ্যম পাঠক ফোরাম করছে। কিন্তু সবাই গতানুগতিক চিন্তে নিয়ে কাট, কপি, পেস্ট করে যাচ্ছে। এ থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
শিক্ষা ফোরাম- শিখি লিখি
শিখি লিখি চর্চা করি এ স্লোগানকে ধারণ করে এক পাঠক লেখক ফোরাম জন্ম হতে পারে। এখানে সমাজসেবা, দেশসেবা, বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ। আর বাংলা ভাষার অবক্ষায় ভুলে ভরা বাংলা শিক্ষা থেকে সঠিক বাংলা বানান শিক্ষার চর্চা, নতুন লেখক তৈরি জন্যও একটা প্লাটফর্ম করা যেতে পারে।
গবেষণা
যে প্রতিষ্ঠান আপনি করুন না কেনো বা আপনি যদি কোনো উদ্যোক্তা হন তাতে সফলতা পেতে গবেষণা বিকল্প নেই। কিন্তু এ বিষয়টি বাংলাদেশে অবহেলিত। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে গবেষণা থাকা দরকার। প্রতিটি কাজে গবেষণা জরুরি। তা হলে সে বিষয়ে সফলতা আসবেই। এ জন্য গবেষণাবিষয়ক একটি পাতা করা যেতে পারে। দেশে কারা কারা গবেষণা সেল করছে। কারা গবেষণায় গুরুত্ব দিয়েছে, তাদের সফলতা কী। সরকার কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছে। এ খাতে বাজেট কেমন। কত এগিয়ে আসা দরকার।
গণমাধ্যমবিষয়ক
গণমাধ্যমবিষয়ক আমি চাই একটি গণমাধ্যমবিষয়ক পাতা থাকুক। যেখানে সংবাদকর্মীদের সুখ-দুঃখের কথা বলা যাবে। থাকবে ওপেনিয়ন। থাকবে সাক্ষাৎকার। মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ থাকবে, বিশেষ প্রতিবেদন। মিডিয়া হাউজগুলোর পরিস্থিতি। সুবিধা অসুবিধা। পরিবেশ, খাবারদাবার-মিডিয়া সংগঠনগুলোর পরিচয়। তথ্যমন্ত্রণালয়ের অধীনে মিডিয়া নিয়ে কাজ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদন। বাজেট। উন্নয়ন। সমস্যা ও সম্ভাবনা। ব্রডকাস্ট মিডিয়ার সবকিছু। এটা সিনিয়র সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান বের করতেন মিডিয়া ওয়াচ। তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তেমন কেউ উদ্যোগ নেননি।
সমবায়, এনজিও ও ক্ষুদ্রঋণদানকারী
এনজিও ও ক্ষুদ্রঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান আর্থিক উন্নয়ন, সমাজসেবা, দেশসেবা, নাগরিক সেবা, পরিবেশ, দুর্যোগ, স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে থাকে। তাদের সফলতা, ব্যর্থতা, বাজেটের অর্থ লোপাটসহ নানা সংবাদ রয়েছে। তাদের নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।
কৃষি অর্থনীতি
কৃষিঅর্থনীতি কাজ করেন সাংবাদিক সাইখ সিরাজ। বাংলাদেশ টেলিভিশনে মাটি ও মানুষ। চ্যানেল আইতে কৃষি সংবাদ হৃদয়ে মাটি ও মানুষ নিয়ে প্রতিদিন বিশেষ প্যাকেজ থাকে। থাকে আলাদা প্রোগ্রামও। এখন বাংলা ভিশন টেলিভিশনে শ্যামল বাংলা নামে কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার হয়। দীপ্ত কৃষি নামে দীপ্ত টিভিতে কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠান হয়। এ বিষয়টি ব্যাপক জনপ্রিয়। তা ছাড়া দৈনিক ইত্তেফাকে কৃষি নিয়ে কাজ করে।
নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি --উদ্যোক্তার খোঁজ
এমএমই বা এসএমই উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করা যেতে পারে। গ্রামে প্রতিভাবান নতুন উদ্যোক্তার খোঁজ, তাদের ঋণদানে সহজলভ্য রাস্তা, উদ্যোক্তা তৈরিতে উৎসাহ। এ নিয়ে সভা সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন। পাশাপাশি সফল উদ্যোক্তাদের সফল স্টোরি। যারা উদ্যোক্তা হয়ে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন, তাদের নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। বণিক বার্তা বছর শেষে একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান করে। আমি চাই প্রতিনিয়ত কাজ করা হোক। তা ছাড়া দৈনিক সকালের খবর প্রথম দিকে এসএমই নামে একটি পাতা করতো। আর বর্তমানে চ্যানেল আই এসএমই নিয়ে কাজ করে মূলত যারা সফল তাদের নিয়ে। কাজ করা উচিত সকলের জন্য।
আউটসোর্সিং বা পার্টটাইম
আউটসোসিং বা পার্টটাইম নিয়ে একটা পাতা করা যেতে পারে। যেখানে স্যোসাল মিডিয়াতে অলস সময় না কাটিয়ে। কর্মসংস্থান হলো। নিজের খরচ চালাতে পারল। পরিবারের হেল্প হলো। কারা করছে। প্রতিষ্ঠানের খোঁজ। আগ্রহীদের তুলে ধরা। প্রতিষ্ঠার পেয়েছেন তাদের সফলতার গল্প ইত্যাদি।
প্রবাস অর্থনীতি
রেমিট্যান্স, বিদেশ থেকে ফিরে দেশে কি করছেন। বিদেশে বাংলাদেদিশের কর্মসংস্থানে তাদের অবদান। প্রবাসী ফেরত নিঃস্বদের নিয়ে উৎসাহ। প্রবাসী ও কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দেশে কিছু করা। কৃষি, মৎস, ছোটো উদ্যোক্তা হতে সহযোগিতা।
ট্যুরিজম
নিদর্শন, যোগাযোগ, হোটেল মোটেল, পরিবহণ, নতুন পর্যটনের আবিস্কার নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।
অর্থ ও বাণিজ্য
এ পাতায় করপোটে পরিচয়। বিশেষ প্রতিবেদন, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাক্ষাৎকার, কোনো গোষ্ঠী বা গ্রুপের বা অ্যাসোসিয়েশনের কিংবা বিষয়ভিত্তিক খাতের নিয়ে বিশেষ ইস্যু করা যেতে পারে।
আবাসন
আবাসন একটি বিশাল সেক্টর। বাড়ির শৈলী, নির্মাণ ব্যয়, ঋণ, করপোরেট প্রোফাইল, কর্মসংস্থান, নানা বিষয় নিয়ে একটি ১৫দিন পর একটি বিশেষ পাতা বের করা যেতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, স্থাপত্য, স্থাপতির পরামর্শ নিয়ে নানা। পাশাপাশি রাজউক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত, আবাসন সংশ্লিষ্ট কাঁচামল যেমন ইট বা ইটের বিকল্প, কাঠ বা কাঠের বিকল্প, সিমেন্ট, টাইল্স, রড, ইস্পাত, গ্লাস বা কাচ, আ্যালুমিনিয়াম, লাইট, ইলেট্রনিক্স বিষয়াদি থাকতে পারে।
লেখক: সংবাদকর্মী
বিএ অনার্স, এমএ (বাংলা)-এনইউ, পিজিডিবিজে-ঢাবি,
pressjonaed@gmail.com
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : জোনায়েদ মানসুর
প্রকাশক কর্তৃক ৮০/১ নয়াপল্টন, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২৯২, ভূঁইয়াপাড়া রোড, খিলগাঁও, ঢাকা-১২১৯।
মোবাইল: ০১৭৮৯৪২১৪৪৪, ০১৯১৩৫৫৫৩৭১
ইমেইল : infobanglargourab@gmail.com, pressjonaed@gmail.com (বিজ্ঞাপন),
ওয়েবসাইট : www.banglargourab.com
© All rights reserved 2025 দৈনিক বাংলার গৌরব