1. pressjonaed@gmail.com : Jonaed Mansur : Jonaed Mansur
  2. admin@banglargourab.com : banglarg :
  3. infobanglargourab@gmail.com : Rumi Jonaed : Rumi Jonaed
বন্দরে দুই হাজার কনটেইনার আটকা - দৈনিক বাংলার গৌরব
১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| বসন্তকাল| বৃহস্পতিবার| বিকাল ৫:২৭|

বন্দরে দুই হাজার কনটেইনার আটকা

নিউজ সোর্স
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫
  • ৭ টাইম ভিউ

বাংলার গৌরব ডেস্ক: ইঞ্জিন সংকটে আমদানি করা পণ্যবাহী কনটেইনার পরিবহন বিপাকে পড়েছে। ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে কনটেইনার পরিবহন ব্যবস্থায় সংকট সৃষ্টি হয়েছে, যার কারণে নির্ধারিত সময়ে আমদানি ও রপ্তানির পণ্য কমলাপুর আইসিডি এবং চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় দুই হাজার কনটেইনার আটকা পড়ে আছে, যা আইসিডিগামী আমদানি পণ্যভর্তি। এর ফলে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

শিপিং এজেন্ট ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আইসিডিগামী কনটেইনার বন্দরে আটকা পড়ায় অতিরিক্ত স্টোর রেন্ট আরোপের ফলে শিপিং এবং ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার ব্যবসাগুলো ক্ষতির মুখে পড়ছে। মূলত, রেলের পণ্য পরিবহনের জন্য নির্ধারিত ইঞ্জিনগুলো সরিয়ে নেওয়ার কারণে কনটেইনারবাহী ট্রেনের জন্য ইঞ্জিন সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বেশিরভাগ কনটেইনার সড়কপথে আনা-নেওয়া করা হয়। তিন-চার শতাংশ কনটেইনার আনা-নেওয়া হয় রেল ও নৌপথে। ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে ট্রেনের মাধ্যমে কনটেইনারবাহী পণ্য আনা-নেওয়া হয়। প্রতিদিন আইসিডিতে পরিবহন করা হয় ১০০ থেকে ১২০টি কনটেইনার।

কিন্তু ইঞ্জিন সংকটের কারণে গত এক মাসে নিয়মিত সময়ের চেয়ে তিনগুণ কনটেইনার বন্দর এবং হালিশহরের চট্টগ্রাম গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) প্রায় আড়াই হাজারের মতো কনটেইনার আটকে যায়। এর মধ্যে সিজিপিওয়াইতে ছয়টি রেখে কমপক্ষে ৩৬০ টিইইউএস কনটেইনার এবং বন্দর অভ্যন্তরে দুই হাজারের মতো কনটেইনার আটকা পড়েছে।

সিজিপিওয়াইয়ের প্রধান ইয়ার্ড মাস্টার আবদুল মালেক গত রোববার বলেন, ‘লোকো (ইঞ্জিন) সংকটের কারণে আমাদের ইয়ার্ডে কনটেইনার, খাদ্যশস্য ও জ্বালানিবাহী রেক আটকা আছে। এর মধ্যে বর্তমানে কনটেইনারের ছয়টি রেক রেডি রয়েছে। দুটি ইঞ্জিন পাওয়া গেছে। একটি বিকেল সাড়ে ৫টায় ছেড়ে গেছে। অন্যটি রাত সাড়ে ১১টায় ছেড়ে যাবে।’

নিয়মিত আমদানিপণ্য সরবরাহ না পেয়ে ঢাকাসহ আশপাশের আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। রমজান সামনে রেখে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি করা ব্যবসায়ীরাও পড়ছেন বিপাকে। বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) ডাইরেক্টর ইনচার্জ (পোর্ট অ্যান্ড কাস্টমস) দোলন বড়ুয়া বলেন, আইসিডিগামী কনটেইনার পরিবহনের জন্য রেলওয়ের সঙ্গে বন্দরের সমঝোতা চুক্তি রয়েছে। এসব কনটেইনার কমলাপুর আইসিডি পৌঁছানো পর্যন্ত শিপিং এজেন্ট কিংবা ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্সদের সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কনটেইনারের পণ্য কমলাপুর আইসিডি থেকে খালাস নেন আমদানিকারকরা।

‘বর্তমানে রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনারগুলোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ ফ্রি-টাইমের পরে চারগুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে শিপিং এজেন্টদের কোনো দোষ নেই। অতিরিক্ত ট্যারিফ চাপানো হলে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে।’

দোলন বড়ুয়া বলেন, ‘পণ্য দ্রুত খালাস হলে কনটেইনারও দ্রুত খালি হয়। এখন কনটেইনার বন্দরে আটকা থাকার কারণে একদিকে শিপিং এজেন্টগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ে পণ্য খালাস নিতে না পেরে আমদানিকারকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে এখানে শিল্পের মেশিনারিজ, গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজসহ কমার্শিয়াল আইটেম থাকে।’বন্দরে আটকে যাওয়া আইসিডিগামী পণ্য পানগাঁও কিংবা চট্টগ্রাম বন্দর থেকেও খালাসের সুযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ঘোষণা বন্দর কর্তৃপক্ষ আগেও দিয়েছিল। কিন্তু আমদানিকারকরা পানগাঁও যেতে উৎসাহী নন।’

বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ ২৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যন্তরে ৪০ হাজার ৫৪৩ টিইইউএস কনটেইনার রয়েছে, যা স্বাভাবিক সময়ে ৩৬ থেকে ৩৮ হাজার টিইইউএসের মতো থাকে। এক মাস আগে ২৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ছিল ৩৭ হাজার ২৫১ টিইইউএস।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। এতে কমলাপুর আইসিডিগামী অন্তত দুই হাজার কনটেইনার চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে। এমনিতে আইসিডিগামী ৮শ কনটেইনার রাখার সুযোগ রয়েছে বন্দরে। আইসিডিগামী কনটেইনারের কারণে বন্দরের অপারেশনে প্রভাব পড়ছে।’তিনি বলেন, ‘ইঞ্জিন সরবরাহ বাড়ানোর জন্য আমরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। রেলওয়ে তাদের নিয়মিত প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলোর শিডিউল ঠিক রাখার জন্য কনটেইনার কিংবা অন্য গুডস ট্রেনের ইঞ্জিন সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে। তারপরেও বন্দরের কনটেইনারের চাপ কমানোর জন্য তারা (রেলওয়ে) ইঞ্জিন সরবরাহ বাড়াচ্ছে। এখন প্রতিদিন তিন থেকে চারটি ইঞ্জিন দেওয়া হচ্ছে।’

বন্দর সচিব বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে যাওয়া আইসিডিগামী কনটেইনারের পণ্য বিকল্প পন্থায় পানগাঁও এবং চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি খালাস নেওয়ার জন্য কাস্টমস থেকে ইতোমধ্যে একটি অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমদানিকারকরা চাইলে সেই সুবিধা নিয়ে পণ্য খালাস নিতে পারেন।’

রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে খাদ্যশস্য ও জ্বালানি পরিবহন করা হয়। একইসঙ্গে কমলাপুর আইসিডিতে আমদানিপণ্যবাহী কনটেইনারও পরিবহন করা হয়। এর জন্য প্রতিদিন গড়ে ১৩টি ইঞ্জিন প্রয়োজন, তবে বর্তমানে ইঞ্জিন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫-৬টি। এসব ইঞ্জিন দিয়েই কনটেইনার, চাল এবং জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চালানো হচ্ছে।

ইঞ্জিন সংকটের কারণ হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান জানান, রেলের নতুন নতুন রুট বাড়ানো হয়েছে, তবে গত দু-এক বছরে নতুন ইঞ্জিন কেনা হয়নি। কিছু ইঞ্জিনও নষ্ট হয়েছে, ফলে ইঞ্জিনের সংকট তৈরি হয়েছে। যাত্রী পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত ইঞ্জিন সরবরাহ করতে হচ্ছে, তাই কনটেইনারসহ গুডস ট্রেনের ইঞ্জিন সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। তিনি জানান, ইঞ্জিনের সাময়িক সংকট কাটাতে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের আওতায় কিছু ইঞ্জিন মেরামত করা হচ্ছে, যাতে রমজান সামনে রেখে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেই অনুযায়ী, কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনের অগ্রাধিকার দিয়ে ইঞ্জিন সরবরাহের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তবে নতুন ইঞ্জিন কেনার জন্য আরও এক থেকে দুই বছর সময় প্রয়োজন। সূত্র: বিজনেস বার্তা

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

Categories

                       © All rights reserved 2025 দৈনিক বাংলার গৌরব