বাংলার গৌরব ডেস্ক: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এবং গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) এর যৌথভাবে “Fortified Edible Oils: Enhancing Health and Nutrition for a Better Future” শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপকের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. নাজমা শাহীন ক্রুড অয়েলে পারদের উপস্থিতি সম্পর্কে বলেন,“ক্রুড অয়েল পরীক্ষায় পারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা পরিশোধন (রিফাইন) করেও দূরীভূত করা সম্ভব হচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল তেলের বিভিন্ন প্যারামিটার নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন যে, খোলা তেলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্যারামিটারে প্রাপ্ত ফলাফল আদর্শ মানের সাথে অনেক বেশি অসংগতিপূর্ণ”।
ড. নাজমা শাহীন আরো বলেন, “তেলের বিভিন্ন প্যারামিটারের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে দেখা যায় যে, নন-ব্রান্ডেড (Non-branded) সয়াবিন তেলের সাথে অন্যান্য তেল বা অপদ্রব্য সংমিশ্রণ করা হচ্ছে।”
আজ ২৬ শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। তিনি তার বক্তব্যে রেস্তোরা মালিক সমিতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা একটা ঘোষণা দেন যে, আপনার রেস্টুরেন্টে খোলা তেল ব্যবহার করেন না। এই ঘোষণার মাধ্যমে ভোক্তারা বুঝতে পারবে যে, কোনটা ভালো কিংবা কোনটা খারাপ।” এছাড়া তিনি ফর্টিফাইড ভোজ্যতেল ব্যবহারে মডেল উপজেলা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোহাম্মদ সোয়েব এর স্বাগত বক্তব্যে শুরু হওয়া উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া৷ তিনি বলেন, “প্রতি বছর ৩ লাখ ২০ হাজার মানুষ ভোজ্যতেল সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।” তিনি এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য গেইন-কে ধন্যবাদ জানান এবং উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হওয়া উক্ত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সুলতান আলম, গেইন-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুলতান আলম প্রচার প্রচারণা বাড়ানোর উপর জোর দিয়ে বলেন,”স্বাস্থ্যগত সমস্যার একটা বড় কারণ হলো তেল। তেলের ব্যবহার যতোই কমাতে পারবো, ততোই আমরা স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে ভালো থাকবো। এজন্য প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হবে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে।”
প্রমাণ সাপেক্ষে উপস্থাপিত ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের সিদ্ধান্ত নেয়ার আহবান জানিয়ে ডা. রুদাবা খন্দকার বলেন, ” তরুণরা দেশের একটা বিশাল অংশ। তাই তরুণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এসকল কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করে যথাযথ সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে।”
সেমিনারে বিএফএসএ’র কর্মকর্তাবৃন্দ, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, রেস্তোরা মালিক সমিতি, গেইন, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।