বাংলার গৌরব ডেস্ক: পবিত্র রমজান সামনে রেখে বাজারে মুরগি, মাছ ও মাংসের দাম বেড়েছে। লেবু, শসা ও বেগুনের দামও ঊর্ধ্বমুখী। তবে রোজার পণ্য হিসেবে পরিচিত খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, রোজা শুরু হতে আর দুই থেকে তিন দিন বাকি রয়েছে। অন্যদিকে এখন মাসের শেষ সময়। এই দুই কারণে ভোক্তারা বেশি করে বাজার করছেন। বাড়তি চাহিদার কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। কারণ, চাহিদার তুলনায় পণ্যের সরবরাহ কম।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা বেড়েছে। গতকাল ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০-২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যেখানে আগের সপ্তাহে ছিল ১৮০-২০০ টাকা। সোনালি মুরগির দামও বেড়ে ২৮০-৩১০ টাকায় পৌঁছেছে। বিক্রেতাদের মতে, রোজার শুরুতে ক্রেতাদের চাহিদা বাড়ায় মুরগির দামও বাড়ছে।

মুরগির পাশাপাশি গরু ও খাসির মাংসের দামও বেড়েছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কিছুটা বেশি। খাসির মাংসের দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ১ হাজার ২০০ টাকায় পৌঁছেছে, আর ছাগলের মাংস বিক্রি হয়েছে ১,০৫০-১,১০০ টাকায়। চাষের চিংড়ি, কই, শিং, তেলাপিয়া, রুই ও পাঙাশ মাছের দামও কেজিপ্রতি ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। তবে আলু, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আলু প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা এবং পেঁয়াজ ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজা শুরু হতে আর দুই থেকে তিন দিন বাকি রয়েছে। অন্যদিকে এখন মাসের শেষ সময়। এই দুই কারণে ভোক্তারা বেশি করে বাজার করছেন। বাড়তি চাহিদার কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে।

রোজার বাজারের বর্তমান অবস্থা : সাধারণত রোজায় লেবু, বেগুন ও শসার চাহিদা বেশি থাকে, আর এ কারণে বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। গত ১৫ দিনে লেবুর দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে সাধারণ মানের লেবুর হালি ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হলেও, গতকাল তা ৪০-৮০ টাকায় পৌঁছেছে। বড় লেবুর দামও বেড়ে ১০০ টাকার আশপাশে রয়েছে। বাজারে বেগুন প্রতি কেজি ৪৫-৬৫ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০-৬০ টাকা এবং দেশি শসা ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি।

বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকটের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। গতকাল ঢাকার তিনটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র কয়েকটি দোকানে স্বল্প পরিমাণে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। ভোক্তারা অভিযোগ করেছেন, রোজার আগেও অন্যান্য পণ্য কিনতে কোনো সমস্যা না হলেও সয়াবিন তেল কিনতে দোকান থেকে দোকানে ঘুরতে হচ্ছে। রাজধানীর মোহাম্মদিয়া হাউজিংয়ের বাসিন্দা গৃহিণী ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, এক সপ্তাহ আগে পরিচিত দোকানে বলে রেখেও সয়াবিন তেল কিনতে পারিনি, পরে কয়েকটি দোকান ঘুরে এক লিটার তেল কিনতে পেরেছি।

বাজারে খেজুর, ছোলা, চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। রমজানের আগে সরকার খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানোয় সরবরাহ বেড়েছে, ফলে মানভেদে খেজুরের দাম কেজিপ্রতি ২০-২০০ টাকা কমেছে। ছোলার দামও এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ১৫ টাকা কমে ১০৫-১১৫ টাকায় নেমেছে। চিড়া, মুড়ি ও গুড়ের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে চিড়া ৭০-৮০ টাকা, আখের গুড় ১৪০-১৮০ টাকা, খেজুরের গুড় ২৫০-৩০০ টাকা ও মুড়ি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।