নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় করজাল বাড়ানোর চেষ্টা করছে সরকার। এ জন্য গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ী ও শিক্ষকদের করের আওতায় আনতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবীকেও করের আওতায় আনা হবে। পেশাজীবীর মধ্যে যারা কর দেওয়ার মতো আয় করেন কিন্তু দিচ্ছেন না, তাদের তালিকা করতে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এদিকে আসছে রমজান ও গরমের সময় বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় সচিবালয়সহ সরকারি-বেসরকারি অফিস, মসজিদ, বাসাবাড়িতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ (এসি) যন্ত্রের ব্যবহার ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, যেসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। রোজার ঈদের আগে এক কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিনামূল্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। নিজ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপদেষ্টারা।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ডিসিরাই সভায় উত্থাপন করেছেন গ্রামাঞ্চলে ব্যবসায়ীরা অনেক আয় করেন। তবে তারা কর দিচ্ছেন না। তাদের করের আওতায় এনে রাজস্ব বাড়াতে চায় সরকার। এ বিষয়ে এনবিআর এখন উদ্যোগ নেবে। এ ছাড়া শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে ৫০ থেকে ৬০ লাখ; কিন্তু কর দেয় মাত্র ৫ লাখ। মোটকথা, জোর করে করের পরিমাণ না বাড়িয়ে আওতা বাড়ানো হবে। ভ্যাটের মতো পরোক্ষ কর না বাড়িয়ে প্রত্যক্ষ করের পরিমাণ বাড়াতে চায় সরকার।
উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের চিকিৎসক-আইনজীবীরা নগদ টাকায় ফি নেন। এ জন্য সেবাগ্রহীতাকে কোনো রসিদও দেন না। এ কারণে তাদের করের আওতায় আনা যায় না। এই ফি যদি ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাহলে একটা রেকর্ড থাকে। বিদেশে এগুলো সব রেকর্ডেড। আইনজীবী বা অন্যান্য পেশার জন্যও এমন ব্যবস্থা করতে হবে। সম্মেলনে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মসংস্থান বাড়াতে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা।
এসির তাপমাত্রা রাখতে হবে ২৫ ডিগ্রিতে সছে রমজান ও গরমে এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি বা তার ওপরে রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ অনুরোধ উপেক্ষা করা হলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কিংবা আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি পর্যবেক্ষণে বিদ্যুৎ বিভাগের নির্দিষ্ট টিম কাজ করবে। কোথাও নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে সে এলাকায় লোডশেডিং হবে।
তিনি বলেন, শীতকালে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৯ হাজার মেগাওয়াট। গ্রীষ্মে সেই বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। সেচ যেহেতু খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাই একে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেব। তবে এসির যে ব্যবহার, এটা যদি পরিমিত আকারে ব্যবহার করা যায়, তাহলে কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়।