1. pressjonaed@gmail.com : Jonaed Mansur : Jonaed Mansur
  2. admin@banglargourab.com : banglarg :
  3. infobanglargourab@gmail.com : Rumi Jonaed : Rumi Jonaed
রোজার আগেই বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও - দৈনিক বাংলার গৌরব
১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| বসন্তকাল| বৃহস্পতিবার| দুপুর ১:৫৬|

রোজার আগেই বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও

নিউজ সোর্স
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১ মার্চ, ২০২৫
  • ৭ টাইম ভিউ

বাংলার গৌরব ডেস্ক: এবার রোজার আগেই বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল। পরিস্থিতি এমন যে, পাঁচটি বাজার ঘুরেও মিলছে না এক লিটারের বোতল, পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানগুলোও খালি। এতে রমজানে বড় সংকটের আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা। অথচ দেশে ভোজ্যতেলের কোনো ঘাটতি নেই—গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার এক লাখ টনের বেশি তেল আমদানি হয়েছে। পাইপলাইনে রয়েছে আরও ৮ লাখ টনের বেশি তেল, যা দেশে ঢোকার অপেক্ষায়। এরপরও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই, যার মূল কারণ হিসেবে উঠে আসছে সিন্ডিকেটের ভূমিকা। এখন সাধারণ মানুষের প্রশ্ন—এই সিন্ডিকেট ভাঙবে কবে?

সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারিভাবে দাম বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের ৬-৭টি কোম্পানি ভোক্তাদের জিম্মি করে রেখেছে। বাজারে তেলশূন্য পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ থাকলেও অদৃশ্য শক্তির চাপে তারা কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না, ফলে চিহ্নিত সিন্ডিকেট ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এর ফলে ভোক্তারা বাজারে অসহায় হয়ে পড়ছেন। এদিকে, রমজান সামনে রেখে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে রমজানে চাহিদা ৩ লাখ টন। দেশে গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি আমদানি হয়েছে ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪৮ টন। এছাড়া দেশে উৎপাদন করা হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টন। আর আমদানি পর্যায়ে এখনো পাইপলাইনে আছে ৮ লাখ ১২ হাজার ৫৬৫ টন। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য নিুমুখী।

এছাড়া বৃহস্পতিবার ( ২৮ ফেব্রুয়ারি ) চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে খালাস হয়েছিল ২১ লাখ ৭০ হাজার ৩ টন। এর মধ্যে ৫ লাখ ২১ হাজার ৯৫২ টন সয়াবিন এবং ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৫১ টন পাম অয়েল। চলতি অর্থবছর (২০২৪-২৫) একই সময়ে ভোজ্যতেল খালাস হয়েছে ২২ লাখ ৭০ হাজার ২৮৯ টন। এর মধ্যে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৬ টন পাম অয়েল এবং ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৯০৩ টন সয়াবিন তেল। দেখা যাচ্ছে, আগের তুলনায় এক লাখ টনের বেশি তেল বেশি আমদানি হয়েছে। তারপরও বাজারে নেই ভোজ্যতেল।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর জিনজিরা কাঁচাবাজারের ৭টি দোকান ঘুরেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের কোনো সন্ধান মেলেনি। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে নয়াবাজারের ৬টি মুদি দোকানেও একই অবস্থা। দুপুর আড়াইটায় কাওরান বাজারের ৫টি মুদি দোকান ঘুরে মাত্র একটিতে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও সেটির গায়ে মূল্য লেখা ছিল না। বিক্রেতারা সেটির দাম ১৯৫ টাকা চাইছেন, যা সরকার নির্ধারিত ১৭৫ টাকার চেয়ে বেশি। তবে এসব বাজারে খোলা সয়াবিন তেল মিলেছে, যা বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ২০০-২২০ টাকায়, যদিও সরকার নির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, গত বছর দেখা গেছে, দেশে ৫-৬টি কোম্পানি সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়ার পর সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সরকার দাম বাড়ানোর পরও বাজারে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করে না, বরং আরেক দফা দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা চালায়। এবারও রোজাকে ঘিরে একই কারসাজি চলছে। অথচ বাজার তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বা শাস্তির আওতায় আনছে না।

সরবরাহ কমানোর বিষয়ে ভোজ্যতেল প্রস্তুতকারক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা হায়দার বলেন, সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে আমরা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়েছি। এটাই আমার বক্তব্য।বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও বেশি ভোজ্যতেল বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। পবিত্র রমজান সামনে রেখেই বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় তাদের সংগঠনে যুক্ত প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সরবরাহ করছে। ভোজ্যতেলের সরবরাহের পরিমাণ বিবেচনায় সংকটের কোনো সুযোগ নেই। সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, অন্য কোম্পানি কী করছে জানি না। সিটি গ্রুপ আগের চেয়ে বেশি তেল বাজারে সরবরাহ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রমজান উপলক্ষে ভোগ্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, বাজারব্যবস্থায় রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রভাব এখনও রয়ে গেছে। ভোজ্যতেলের সরবরাহে কিছু ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে অসহযোগিতা করছে, যা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে পারে। এ পরিস্থিতির কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

Categories

                       © All rights reserved 2025 দৈনিক বাংলার গৌরব